বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘মিয়ানমারের মতো দেশ আমাদের দেশে গুলি করে হতাহত করে, এসব কীসের আলামত? চীনের সঙ্গে এত বন্ধুত্ব, মিয়ানমার চীনের লালিত দেশ সেই দেশ থেকে গুলি আসে- এটা নতুন কোনো খেলা কিনা? জানি না, আমি বুঝতেছি না। আজকে রাখাইন থেকে সৈনিক পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়- এটা কীসের লক্ষণ? আবার কি যুদ্ধ যুদ্ধ খেলবেন? আবার কী বলবেন দেশ বাঁচাতে হবে? আর আপনার কাজ আপনি করবেন?’

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে ‘নারী সমাজের অপমানের শেষ কোথায়?’ শীর্ষক মানববন্ধনে তিনি এসব প্রশ্ন রাখেন।

সরকারের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, ‘সীমান্তে এ পর্যন্ত আমাদের দেশের ৭শ মানুষকে হত্যা করা হলো, একটারও প্রতিবাদ করা হয়নি। হাতে লাঠি ও হারিকেন দিয়ে সীমান্তে বসিয়ে রাখেন। আমার দেশের মানুষকে গুলি করে মারা হবে, প্রতিবাদ করতে পারবে না তাহলে তাদের বসিয়ে রেখে লাভ কী? অথচ যখন বিডিআর ছিল তখন বিএসএফের হাটু কাঁপতো একটা গুলি করলে ১০টা পাল্টাগুলি ফেরত দিত তারা। কিন্তু পিলখানায় সেনাবাহিনীর চৌকস ৫৭ জন অফিসারকে হত্যা করা হয়। আপনি প্রতিটি অপকর্ম করে পার পেয়ে যান। দেশ নিয়ে যত খেলা খেলছেন, আমার মনে হয় আপনার সব অপকর্মের জবাব এক দিনে একবারে দিতে হবে।’

পুলিশ নির্যাতনে বডিবিল্ডার ফারুক হত্যা প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, এজন্য কী আপনার সোনার ছেলেদের পোশাক দেওয়া হয়?’

ছাত্রলীগের নেতাকর্মী কর্তৃক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে ধর্ষণ প্রসঙ্গে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এসব ঘটনায় হাইকোর্ট কেন সুয়োমোটো জারি করেন না? এই যে আমাদের হাবিবুর রহমান হাবিব কী বলেছেন, তার জন্য তাকে পাঁচ মাসের জেল দিয়েছে। বিচার বিভাগ যদি অন্ধ হয়ে যায়, বিচারপতি যদি চাকরি রক্ষার্থে সরকারকে খুশি করে শুধুমাত্র চাকরি করেন, তাহলে বিচার বিভাগ কলঙ্কিত হয়।’

ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষও আওয়ামী লীগের হাতে নিরাপদ নয় উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘ফরিদপুর ও ঝিনাইদহে সরেজমিনে দেখে এসেছেন নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্যসচিব নিপুণ রায় চৌধুরী। এসব এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নৌকায় ভোট না দিয়ে ঈগল প্রতীকে ভোট দিয়েছেন। এ কারণে তাদের ওপর আওয়ামী লীগ নির্যাতন করেছে।’

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলন ও ‘৬৯র গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদের ভূমিকা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগ, সারাদেশে নারী নির্যাতন করছে, একটি কলঙ্কিত জাতি প্রতিষ্ঠিত করছে-এই অবস্থায় কোথায় আমাদের সেই ছাত্র সমাজ? আপনারা জেগে উঠুন।’

নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্যসচিব নিপুণ রায় চৌধুরীর পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান,আবদুল আউয়াল মিন্টু,বিএনপি নেতা শিরিন সুলতানা, তাইফুল ইসলাম টিপু, রাশেদা বেগম হীরা, নিলোফার চৌধুরী মনি, আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, আরিফা সুলতানা পাপন, নাদিয়া পাপন, যুবদলের পার্থ দেব মন্ডল প্রমুখ।